ঢাকা, ১ ভাদ্র (১৬ আগস্ট):

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অনেক তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহিদ হয়েছেন। অনেকে হাত-পা-চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে মানুষের অধিকার যাতে কখনো ক্ষুণ্ন না হয় এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

উপদেষ্টা আজ ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ৬তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি ২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, যেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের স্কুলের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব নিতে হবে। এদেশে ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না। তিনি আরো বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকার পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে, কারণ এগুলো মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশে মানুষ মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনও অনেক পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়। দৈনিক প্রায় ৬ কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তিনি বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকও বিবেচনায় রাখতে হবে। নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।

পরে উপদেষ্টা কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন এবং নতুন ৬তলা ভবনের উদ্বোধন করেন।