হাওড়ের বাঁধ সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে জাইকার সাথে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

ঢাকা, ১২ ভাদ্র (২৭ আগস্ট):
হাওড় এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্পের (হাওড় ফেজ-২) আওতায় হাওড়ের বাঁধ সুরক্ষা নিয়ে আজ ঢাকায় পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রতিনিধিদলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাইকার ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর Teruaki Fujii।
‘হাওড় এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন’ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হাওড় এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বোরো ধানকে আগাম বন্যা হতে রক্ষা করা এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাওড়সমূহের ডুবন্ত বাঁধে বিভিন্ন ধরনের ঢাল প্রতিরক্ষা তৈরি করে টেকসই ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা। যার ফলে কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ মানোন্নয়ন করা সম্ভব হবে। ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে ও প্রকল্প এলাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
দেশে হাওড় এলাকার ৫টি জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনাকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ৫টি জেলার ১১ টি হাওড়কে প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত অবকাঠামোসমূহ হচ্ছে হাওড় এলাকায় ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ ৪৫০.১৯ কিলোমিটার; খাল/নদী পুনঃখনন ৭৭.৭০০ কিলোমিটার; ইরিগেশন ইনলেট ৫৮টি; Constitution of Flood ৫৮টি; রেগুলেটর /বক্স ড্রেনেজ আউটলেট ২২টি; থ্রেশিং এন্ড ড্রাইয়িং ফ্লোর (চাতাল)৯টি; পানি ব্যবস্থাপনা গ্রুপের জন্য অফিস বিল্ডিং নির্মাণ ৮টি; গেট মেরামত ৬টি।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় উদ্যোগে গৃহীত প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পটির সম্ভাব্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৪৮.১২ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে জিওবি হতে অর্থায়ন করা হবে ৫৮৪.১২ কোটি যা মোট ব্যয়ের ২৬% এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে অর্থায়ন করা হবে ১৬৬৪ কোটি টাকা যা মোট ব্যয়ের ৭৪%। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে জিওবি ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের সম্ভাব্য মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০২৬ হতে জুন ২০৩৩ পর্যন্ত। ২০২৬ সালের মার্চ মাসে প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন্যায় যাতে হাওড়ের ফসল নষ্ট না হয়, কৃষকরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেজন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করছি জাইকার আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১১ টি হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হলে হাওরে কৃষি উৎপাদনে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি হাওড় এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোকাব্বির হোসেন, যুগ্মসচিব দীপান্বিতা সাহা, উপসচিব মো: মোবাশশেরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রবিন কুমার বিশ্বাস, জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রতিনিধি দলের প্রোগ্রাম অফিসার Oyama Erina এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর Omagari Hideo উপস্থিত ছিলেন।