উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল

উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি রয়েছে অন্তত সাড়ে ছয় হাজার পরিবার। ডুবে গেছে রোপা আমন, আউশ, সবজিসহ ৪০৩ হেক্টর জমি। এছাড়া ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণীকক্ষে পানি প্রবেশ করায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। গতকাল স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নে অন্তত ৫০০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া আলাতুলি ইউনিয়নে ৬০০, শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নে ৪৫০, পাকা ইউনিয়নে দুই হাজার ও দুর্লভপুর ইউনিয়নে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে মাসখানেক।
আলাতুলী ইউনিয়নের আব্দুর রহমান জানান, পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলো ডুবে গেছে। সেখানের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।
শিবগঞ্জ উপজেলার দুলর্ভপুর ইউনিয়নের নামোজগন্নাথপুরের বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন ইসলাম বলেন, ‘নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমিগুলো পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান ও অন্যান্য ফসল এখন পানির নিচে। অনেক বাড়ির চারদিকেই পানি। বিদ্যালয়গুলোয়ও পানি উঠেছে।’
শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহা. আজম আলী বলেন, ‘ইউনিয়নের দোভাগী, ফিল্টেরহাট, নামোজগন্নাথপুর, বাদশাপাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি ডুবে গেছে। প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশের কারণে শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিচু এলাকার ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণীকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আবার কোনো কোনো বিদ্যালয়ে বন্ধ রয়েছে পাঠদান। তবে আশপাশের উঁচু জায়গা খুঁজে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নিম্নাঞ্চলের ছয় হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে যাচাই-বাছাই করে তাদের ত্রাণের আওতায় আনা হবে।