খুলনায় অরক্ষিত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল: সংকটে কোটি মানুষের চিকিৎসা

খুলনা জেলা প্রতিনিধি
১৯৬৮ সালে খুলনার খানজাহান আলী থানার মীরেরডাঙ্গায় ভৈরব নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় ২০ শয্যাবিশিষ্ট সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কোটি মানুষের জন্য ডায়রিয়া, টিটেনাস, হাম ও জলাতঙ্কসহ সংক্রামক রোগের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র এটি। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শয্যা সংখ্যা বা অবকাঠামো—কিছুই বাড়েনি।
ভবনের ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে। বৃষ্টিতে পানি পড়ে ভেতরে। স্যাঁতস্যাঁতে স্টোররুমে ওষুধ নষ্ট হচ্ছে। কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো পরিত্যক্ত ও বসবাসের অনুপযোগী। তবুও কয়েকজন কর্মচারী ঝুঁকি নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।
সীমানা প্রাচীর না থাকায় হাসপাতাল এলাকায় গরু-ছাগল ও বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ। নেই কোনো নিরাপত্তা প্রহরী বা নৈশপ্রহরী। রাতে কর্তব্যরত নার্সদেরকেই গেট খুলতে হয়। নিয়মিত চুরির ঘটনাও ঘটে। ফলে আতঙ্ক নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয় চিকিৎসক-নার্সদের।
২৩টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১০ জন। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে ১৩টি পদ। নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আয়া, বাবুর্চি, ওয়ার্ড বয়, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ অনেক পদ খালি। আউটসোর্সিংয়ের কর্মীরা ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না।
প্রতিদিন গড়ে ৩৫–৪০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী আসেন। গরম বাড়লে সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ ৫২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। সীমিত শয্যা ও স্যালাইন সংকটে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. হিমেল ঘোষ বলেন, সংকট নিরসনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি জানান, নিরাপত্তাহীনতার কারণে সরঞ্জাম আনা সম্ভব হচ্ছে না, স্যাঁতস্যাঁতে ভবনে ওষুধ সংরক্ষণেও সমস্যা হচ্ছে।